রাম্বুটান / Rambutan

রাম্বুটান। ইংরেজিতে Rambutan আর এর বৈজ্ঞানিক নাম Nephelium lappaceum. এটি প্রধানত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ফল। এটি আমাদের দেশের লিচুর মতো সুস্বাদু , সুমিষ্ট, সুগন্ধযুক্ত, রসালো এবং লোভনীয় একটি ফল। মালয়-ইন্দোনেশিয়া এর আদি জন্মস্থান। ২২-৩০° সে. তাপমাত্রা রাম্বুটানের জন্য অধিক উপযোগী।
ফলটি দেখতে অনেকটা ভেরেন্ডা ফলের মতো। গাঢ় সবুজ রঙের ভেরেন্ডা বীজের বহিরাবরণে থাকে নরম কাঁটা। ভেরেন্ডার বীজ থেকে ক্যাস্টর ওয়েল প্রস্তুত করা হয় যা গ্রিজ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সবুজ খোসাযুক্ত এই ভেরেন্ডা বীজের সাথে রাম্বুটানের কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ইন্দোনেশিয় ভাষায় rambut শব্দের অর্থ hair বা চুল। ফলের খোসায় চুলের ন্যায় বস্তু থাকায় ফলটির এমন নামকরণ করা হয়েছে।
অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট এ ফলটি পাকলে সবুজাভ হলদে রঙ ধারণ করে। প্রজাতিভেদে হালকা লাল, বাদামী এমনকি কালচে রঙের রাম্বুটানও দেখা যায়। ফলের খোসায় নরম কাঁটার মতো লোম/চুল থাকায় আমাদের দেশে অনেকে একে ‘দাঁড়িওয়ালা লিচু’ নামকরণ করেছে।
রাম্বুটান একটি চির সবুজ গাছ। প্রজাতিভেদে এ গাছের উচ্চতা ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত হয়। পাতার দৈর্ঘ ১০-৩০ সে.মি। ফলের দৈর্ঘ্য হয় ৩ থেকে ৬ সেমি. আর ফলের বেড় হয় ৩ থেকে ৪ সেমি. পর্যন্ত। ফুল খুবই ছোট ২.৫ থেকে ৫ মিলি মিটার হয়ে থাকে। বীজের সাইজ হয় ১ থেকে ১.৩ সে. মিটার। প্রতি থোকায়১০ থেকে ২০ টি পর্যন্ত ফল ধরে।
পুরুষ ফুল এবং স্ত্রী ফুল আলাদা আলাদা গাছে হয়। আবার কিছু গাছ আছে যাতে একই সাথে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল ফোটে। রাম্বুটানের ফুলে প্রচুর পরিমাণে নেকটার বা পুষ্পরস থাকে। আর পুষ্পরস আহরণের জন্য প্রচুর মৌমাছি আসে। মৌমাছি এবং অন্যান্য কীট পতঙ্গের মাধ্যমে প্রধানত রাম্বুটান ফলের পরাগায়ণ সংঘটিত হয়। এ ফুলের মধু খুবই উন্নত মানের।
প্রাপ্ত বয়ষ্ক প্রতিটি গাছে বছরে ৫০০০ হতে ৬০০০ ফল আসে। যার ওজন হয় ৬০ থেকে ৭০ কেজি। হেক্টর প্রতি ফলন ২০ টন। ফল পাকার পর গাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়, তা না হলে ফলের মিষ্টতা কমে যায়। ফুল আসার পর থেকে ফল সংগ্রহ পর্যন্ত সময় লাগে ১৫ থেকে ১৮ সপ্তাহ।
রাম্বুটান ফল গোলাকার ও ডিম্বাকৃতির হয়ে থাকে। খোসা ছাড়ানোর পর যে শাঁষ পাওয়া যায় তার রঙ সাদা। শাঁস খাওয়ার পর যে বীজটা থাকে তা ফেলে না দিয়ে বাদামের ন্যায় ভেজে খাওয়া হয়। ভাজা বীজও বেশ সুস্বাদু। রাম্বুটান গাছে সাধারণত বছরে দুইবার ফল আসে। প্রথমবার ফল পাকে জুন-জুলাই মাসে আর দ্বিতীয়বার ডিসেম্বর মাসে।

No comments:

Post a Comment

লাবাং